প্রতিবছর ঘোষণা না দিয়ে একবারে পাঁচ বছর মেয়াদে ঘোষণা দেওয়ার পরামর্শও দেন তাঁরা।
রিহ্যাব নেতারা মনে করেন, অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ায় দেশ থেকে অর্থপাচার কিছুটা হলেও রোধ করা যাবে। এতে আবাসনশিল্পে কর্মসংস্থান হবে। একই সঙ্গে এই অর্থ দেশে বিনিয়োগ করার মাধ্যমে সরকারের কর জালের আওতায় এলেন অপ্রদর্শিত অর্থের মালিকরা। এতে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে।
গতকাল রবিবার প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট (২০২৪-২৫) নিয়ে আবাসন খাতের শীর্ষ সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা এসব কথা বলেন। রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে রিহ্যাব সভাপতি মো. ওয়াহিদুজ্জামান লিখিত বক্তব্য দেন।
রিহ্যাব সভাপতি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ার ফলে ২০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা অর্থনীতির মূল ধারায় যুক্ত হয়েছে। সরকার এই খাত থেকে দুই হাজার কোটি টাকা রাজস্ব পেয়েছে।
আবাসন খাতের রেজিস্ট্রেশন খরচ অনেক বেশি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে করপোরেট করসহ প্রায় ৩০ শতাংশ খরচ দিতে হয়। প্রস্তাবিত বাজেট পাসের আগে জমি ও ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন ব্যয় ৭ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে সংগঠনের নেতারা আরো বলেন, বিশ্বে একমাত্র বাংলাদেশেই আবাসন খাতে রেজিস্ট্রেশন খরচ অনেক বেশি। আবার নির্মাণসামগ্রীর ব্যয়ও বেশি।
ফলে ফ্ল্যাটের দাম বেড়ে যাচ্ছে। এ কারণে রেজিস্ট্রেশন ব্যয়ের হার পরিবর্তন করা উচিত। হাত বদল হয় এমন ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন খরচ ৪ শতাংশ করা, ফ্ল্যাট ক্রয়ের ক্ষেত্রে এক অঙ্কের সুদহার নির্ধারণসহ মধ্যবিত্ত মানুষ যাতে মাথা গোঁজার ঠাঁই পায়, সে জন্য বিশেষ স্কিম চালুর দাবি জানান নেতারা। অংশীজন নিয়ে যাঁরা বাড়ি নির্মাণ করছেন, তাঁদের নজরদারি এবং আইনের আওতায় আনার দাবিও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
রিহ্যাব সভাপতি আরো বলেন, সব নাগরিকের সামর্থ্য এক রকম হয় না। তবে সব নাগরিকের স্বপ্ন একটি মাথা গোঁজার ঠাঁই তৈরি করা। চাহিদার কারণে অনেক ফ্ল্যাট মালিক পুরাতন ফ্ল্যাট বিক্রি করে নতুন ফ্ল্যাট কিনতে চান, কিন্তু পুরাতন ফ্ল্যাটের নিবন্ধন ব্যয় নতুন ফ্ল্যাটের সমান হওয়ায় অনেকের স্বপ্নপূরণ হচ্ছে না। প্রস্তাবিত বাজেট পাস হওয়ার আগে পাঁচ বছরের পুরনো ফ্ল্যাট ৪ শতাংশ হারে রেজিস্ট্রেশন ব্যয় নির্ধারণের দাবি জানান তিনি।
সবার জন্য আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট পাসের আগে রিহ্যাবের দাবি ও প্রস্তাবগুলো বিবেচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও এনবিআর চেয়ারম্যানের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
অর্থনীতিতে আবাসন খাতের অবদানের কথা তুলে ধরে রিহ্যাব সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের আবাসন খাত প্রতিবছর প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা এ খাতে নিয়ে আসছে। এতে বিষয়টি দেশের অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আহরণে কার্যকর ভূমিকা রাখছে।
রিহ্যাব সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো ফ্ল্যাট তৈরির মাধ্যমে আবাসনের মালিকানা সহজলভ্য করে নাগরিকদের মধ্যে আত্মনির্ভরশীলতা তৈরি করছে। এ ছাড়া সরকারের রাজস্ব আয়, কর্মসংস্থান, লিংকেজ শিল্প প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহসভাপতি-১ এম এ আউয়াল, সহসভাপতি-২ মোহাম্মদ আক্তার বিশ্বাস, সহসভাপতি-৩ প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ, সহসভাপতি (অর্থ) আব্দুর রাজ্জাক, সহসভাপতি হাজি দেলোয়ার হোসেন এবং পরিচালক ও প্রেস অ্যান্ড মিডিয়া স্ট্যাডিং কমিটির চেয়ারম্যান লাবিব বিল্লাহ।
ঢাকা অফিস
সিটিহার্ট বিল্ডিং, সুইফটঃ ১৩/১, ৬৭ নয়াপল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল : 0১৬৭৩৭২৮৮৬৫
ই-মেইল : sangbadprothom@gmail.com
Copyright © 2025 দৈনিক প্রথম সংবাদ. All rights reserved.