স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, কোটা আন্দোলনে জানমাল অনিশ্চয়তায় পড়লে পুলিশ বসে থাকবে না। কোটা নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অযথা রাস্তায় ভিড় না করতে এবং শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ শিক্ষাঙ্গনে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করছি। গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা আন্দোলন করছে, তারা শিক্ষিত ছেলে, মেধাবী ছেলে। তারা কেন রাষ্ট্রের বিপক্ষে যাবেন? তারা নিশ্চয়ই সবকিছু পর্যবেক্ষণ করে ফিরে যাবেন। পুলিশ যখন অপারগ হয়ে যায়, তখনই অ্যাকশন আসে। যখন অগ্নিসংযোগ ও ধ্বংস করতে যাবে, যখন জানমালের অনিশ্চয়তা তৈরি হবে, যখন অনৈতিকভাবে কোনো সিচুয়েশন তৈরি হয় তখন পুলিশ বসে থাকবে না। কোটাবিরোধীরা সরকারের নির্বাহী আদেশের অপেক্ষায় আছেন এ নিয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা বিলুপ্ত করার ঘোষণা দেন। দেশের বিচারবিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন।
আদালত থেকে যে নির্দেশনা এসেছিল এতে ছাত্ররা মনে করেছেন তাদের যে চিন্তাভাবনা, তা থেকে তাদের দূরে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, এ কারণে তারা রাস্তায় চলে এসেছেন। তিনি বলেন, তারা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, তারা খুবই মেধাবী, তাদের চাহিদা আমরা শুনব। কিন্তু শোনারও একটা সীমা বোধ হয় থাকে। তারা বোধ হয় তা অতিক্রম করে যাচ্ছেন। বেশ কয়েক দিন হলো তারা একই কাজ করছেন। এরই মধ্যে দেখেছেন, প্রধান বিচারপতি একটি নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন, যে নির্দেশ হাই কোর্ট দিয়েছেন, তা স্থগিত। যে মামলা চলছে, সে মামলার রায় না হওয়া পর্যন্ত তা স্থগিত থাকবে।
কাজেই হাই কোর্ট যে নির্দেশনা দিয়েছিলেন, তা অচল, তা এখন নেই। আমার মনে হয়, ছাত্রদের এসব বোঝা উচিত। রায় যখন নেই, তখন আন্দোলন করছেন কেন? আমার মনে হয়, আদালত যে নির্দেশনা দিয়েছেন, তা খুবই পরিষ্কার। ছাত্রদেরও অনুরোধ করা হয়েছে, তাদের যদি কিছু বলার থাকে, তাহলে আদালত তাদের কথা শুনবেন। তারা যেন আদালতে আসেন।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, শিক্ষার্থীরা যেমনটি চেয়েছিলেন, সেদিকেই যখন যাচ্ছে, তখন রাস্তায় থেকে তাদের কষ্ট করার দরকার নেই। আদালত সব ধরনের সুযোগ তাদের জন্য রেখেছেন। তাদের কথা শুনতে চাচ্ছেন আদালত। এখন রাস্তায় অবস্থান করার কোনো প্রয়োজন আছে বলে আমার মনে হয় না। আর পৃথিবীর অনেক দেশে এই ধরনের কোটা রয়েছে। অনগ্রসর কোনো জায়গাকে লক্ষ্য রেখে এ ধরনের কোটা ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই ধরনের আন্দোলন হলে ঘোলা পানি তৈরির লোকের অভাব হয় না। আমরা যে তথ্য পাচ্ছি, অনেকেই তাদের ব্যবহার করার জন্য কাজ শুরু করে দিয়েছে, দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। আমি মনে করি, আমাদের ছাত্রসমাজ তাদের কুমন্ত্রণা কানে নেবে না। যেহেতু এটি মীমাংসার পথে চলে গেছে, তারা ব্লকেড প্রত্যাহার করে ফিরে যাবেন।
মাদক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মন্ত্রী বলেন, সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে আমাদের যুবসমাজকে রক্ষা করা সহজ হবে। আমরা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে ঢেলে সাজিয়েছি। আগে ‘ঠুঁটো জগন্নাথ’ এর মতো অধিদপ্তর কাজ করত। প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় এখন দেশব্যাপী এর ব্যাপ্তি ঘটিয়েছি। তিনি বলেন, আমাদের বিজিবি এবং কোস্টগার্ড সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রয়েছে মাদকের সাপ্লাই বন্ধ করার জন্য। এ ছাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে আমাদের নজরদারি রয়েছে। আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি।
ঢাকা অফিস
সিটিহার্ট বিল্ডিং, সুইফটঃ ১৩/১, ৬৭ নয়াপল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল : 0১৬৭৩৭২৮৮৬৫
ই-মেইল : sangbadprothom@gmail.com
Copyright © 2025 দৈনিক প্রথম সংবাদ. All rights reserved.