উল্লাপাড়ার বড়পাঙ্গাসী ডিগ্রি কলেজের পরিদর্শক আবু বক্কর সিদ্দিক ভূয়া জেলে সেজে জলাশয় দখল

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ভুয়া সমিতি দেখিয়ে সদস্যদের সই জাল করে খাস জলাশয় ভুয়া জেলে সেজে দখলে নেওয়ার পাঁয়তারা করছেন বড়পাঙ্গাসী তরুন যুব সংঘ ডিগ্রি কলেজের পরিদর্শক আবু বক্কর সিদ্দিক। প্রভাবশালীদের কারণে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এমন প্রতারণার শিকার হচ্ছে প্রান্তিক জেলে পরিবারগুলো।
এ ঘটনায় উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছে ভুক্তভোগী ২০জন জেলেরা।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার পূর্ণিমাগাঁতি ইউনিয়নের গয়হাট্টা কোনাগাঁতী গ্রামে ৮ বিঘা আলমের পুকুর নামে পরিচিত খাস জলাশয়টি ভুয়া সমিতির মাধ্যমে সদস্যদের না জানিয়ে ভুয়া সই দিয়ে জলাশয়টি দখলে নেওয়ার পাঁয়তারা শুরু করেছে বড়পাঙ্গাসী তরুন যুব সংঘ ডিগ্রি কজেলের পরিদর্শক আবু বক্কর সিদ্দিক। এমনকি সে একজন সরকারি কলেজের পরিদর্শক হয়ে গয়হাট্টা কোনাগাঁতী মৎসজীবি সমবায় সমিতিতে সাধারণ সম্পাদক পদ দেখিয়ে এমন প্রতারণা করে আসছে বলে জানা গেছে।
এদিকে কলেজের পরিদর্শক হয়ে ভুয়া সমিতি করে জেলে সেজে প্রতারণা করায় ক্ষোভ বিরাজ করছে জেলেসহ স্থানীয়দের মাঝে। তার এমন কর্মকান্ডে হতাশায় সুবিধা বঞ্চিত প্রান্তিক জেলে পরিবারগুলো। এঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে আবু বক্কর সিদ্দিকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন জেলে পরিবারের সদস্যরা।
কোনাগাতি মৎস্য সমবায় সমিতির আর একজন সদস্য মোঃ বাচ্চু মিয়া বলেন, আমাদের সমতির সকল জেলের কার্ড আটকে রেখে এই বক্কার উল্লাপাড়া স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোবারকের ভয় দেখিয়ে তাকে দিয়ে উল্লাপাড়ায় ত্রাস সৃষ্টি করে পুকুর নিয়ে অন্যের কাছে বিক্রি করে দিয়ে আমাদের বঞ্চিত করছে। আমরা এই বক্কারের বিচার চাই এবং আমাদের ন্যায্য দাবি ফিরে পেতে চাই।
এ বিষয়ে গয়হাট্টা কোনাগাঁতী আন্দিয়ার পুকুর মৎসজীবি সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ রহিম হোসেন জানান, আবু বক্কার নিজেই তার শ্যালককে সভাপতি এবং সে নিজে সাধারণ সম্পাদক হয়ে এই সমিতি নিয়ে বিভিন্নভাবে প্রতারণা করে প্রকৃত জেলেদের ন্যায্য পাওনা থেকে দূরে রেখেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন প্রকৃত জেলেদের পুকুর দিলে আমাদের মতো অসহায় পরিবারগুলো বেঁচে থাকবে।
তিনি আরও জানান, আমরা এই পুকুর পাড়ের বিশজন কাঠগারি জেলে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আমাদেরই পুকুর পাওয়ার কথা অথচ আমাদের গ্রাম থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে কামালপুর গ্রামের বড় পাংগাসি কলেজের পরিদর্শক আবুবক্কার কোনাগাতী সমিতির সেক্রেটারি হয়ে বারবারই আমাদের সাথে প্রতারণার মাধ্যমে এই পুকুর হাতিয়ে নিয়ে মোটা অংকের টাকা নিয়ে বিক্রি করে দিচ্ছে?
কোনাগাতের সমতির সভাপতি রবিউল করিম বলেন, আমি এই সমতির প্রায় ২০ বছর সভাপতি ছিলাম অথচ এই বক্কার আমার সিগনেচার জাল করে আমাকে সভাপতি পদ থেকে বাদ দিয়ে সহ সভাপতি করে দিয়েছে এবার আমরা সমিতির শ্যালক দুলাভাই দুইজন বাদে ১৮ জন সদস্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার ভূমি ও সমবায় অফিসার বরাবর এই সমিতি থেকে যেন পুকুর না পায় তার জন্য আবেদন দিয়েছি। একাধিকবার অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছি না। একজন কলেজের পরিদর্শক সে কিভাবে জেলে হয় এটাই আমাদের জানার বিষয়, আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত জেলেদের ন্যায্য আদায়ের দাবি করছি।
এবিষয়ে উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার উজ্জ্বল হোসেন মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও ফোন রিসিভ করেননি। এজন্য বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।