মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ছোট ফেনী নদীর ভাঙনে বিলীন হাজারো মানুষের ভিটেমাটি চোলাই মদসহ যুবলীগ নেতাকে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ     ধর্ষণ মামলা তুলে নিতে হুমকির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন সলঙ্গায় আওয়ামীলীগ নেতা কতৃক মিথ্য অপপ্রচার ও  মামলা দায়ের চেষ্টার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ও প্রতিবাদ সভা হাজারীহাট হাই স্কুল এন্ড কলেজের এসএসসি পরিক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠিত চরপার্বতী সিডিউল কাস্ট উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরিক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠিত সিরাজগঞ্জে দুই মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত-১৫ আলোকিত শান্তিরহাট প্রবাসী ফোরাম’র অভিষেক ও গুণীজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত দেশে নব্য ফ্যাসিবাদের আবির্ভাব হয়েছে:নোয়াখালীতে শিবির সভাপতি কোম্পানীগঞ্জ প্রবাসী যুব পরিষদ যুক্তরাষ্ট্র’র আয়োজনে ঈদ প্রীতি অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত
Notice :
Wellcome to our website...

বিদেশি বিনিয়োগ ও অপারেশনাল মডেলের নবযুগের সূচনা

প্রতিনিধি: / ৪১ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : বুধবার, ১২ জুন, ২০২৪

অবশেষে শুরু হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের বহুল প্রত্যাশিত পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালের (পিসিটি) কার্যক্রম। সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী ‘মায়ের্কস দাবাও’ নামে একটি কন্টেইনার জাহাজ টার্মিনালে নোঙর করার মধ্য দিয়ে সোমবার নিয়মিত পরিচালনা কার্যক্রম শুরু হয়।

টার্মিনালটি বছরে প্রায় পাঁচ লাখ বিশ-ফুট সমতুল্য ইউনিট (টিইইউ) পরিচালনা করবে বলে কর্তৃপক্ষ আশা করছে। পিসিটি চট্টগ্রাম বন্দরের ইতিহাসে প্রথম টার্মিনাল যা বিদেশি সংস্থা ‘রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল’ দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। এটি বিদেশি বিনিয়োগ এবং অপারেশনাল মডেলের নতুন যুগের সূচনা করেছে। এই রূপান্তর চট্টগ্রামকে একটি ল্যান্ডলর্ড বন্দর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। যা বাংলাদেশের সামুদ্রিক অবকাঠামোর জন্য একটি উলেস্নখযোগ্য উন্নয়ন।

সৌদি আরবের জেদ্দাভিত্তিক রেড সি গেটওয়ে টার্মিনালের (আরএসজিটি) সঙ্গে ছয় মাস আগে চুক্তি হয় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের। কাস্টমস আনুষ্ঠানিকতা ও প্রয়োজনীয় ইকু্যইপমেন্ট সংগ্রহ করে সোমবার রেড সি গেটওয়ে বাংলাদেশ লিমিটেড কাজ শুরু করে।

বন্দর-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন এই টার্মিনালের সুবাদে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়বে। কমে আসবে জাহাজের গড় অবস্থানকাল। নতুন নির্মিত এই টার্মিনাল বছরে পাঁচ লাখ টিইইউএস (২০ ফুট সমমানের) কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করতে সক্ষম হবে। গত বছর দেশের প্রধান এই সমুদ্রবন্দর ৩০ লাখ ৫০ হাজার টিইইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করেছে।

বন্দর সূত্র জানায়, দায়িত্বপ্রাপ্ত বিদেশি প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে পিসিটিতে আসা প্রথম জাহাজ মায়ের্কস দাবাও সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী। মালয়েশিয়ার পোর্ট কেলাং হয়ে কন্টেইনার নিয়ে এটি চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। জাহাজটির দৈর্ঘ্য ১৮৫ দশমিক ৯৯ মিটার ও ড্রাফট (পানির নিচে থাকা অংশ) ৯ মিটার।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, বন্দরের নিজস্ব অর্থায়নে এক হাজার ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা উপকূলে নির্মিত হয়েছে পিসিটি। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় সৌদি আরবের আরএসজিটি এই টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব পায়। তারা শর্তসাপেক্ষে আগামী ২২ বছর টার্মিনালটি পরিচালনা করবে। গত বছরের ৬ ডিসেম্বর আরএসজিটির সঙ্গে এ বিষয়ে চুক্তি হয়। অবশ্য তার আগেই নির্মাণকাজ শেষে টার্মিনালটি উদ্বোধন করা হয়েছিল।

পরীক্ষামূলকভাবে সীমিত আকারে এখানে পণ্যও খালাস করা হয়। তবে গ্যান্ট্রি ক্রেন না আসায় শুরুতেই তারা পূর্ণ সক্ষমতায় যেতে পারছে না বলে জানা গেছে। আপাতত ক্রেনযুক্ত জাহাজ ভেড়ানো হবে। গ্যান্ট্রি ক্রেন এলে ক্রেনবিহীন জাহাজও হ্যান্ডলিং করা হবে। গ্যান্ট্রি ক্রেন দিয়ে অল্প সময়ে জাহাজে অধিক কন্টেইনার ওঠানামা করানো যায়।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়াল অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল জানান, সব সরঞ্জাম সংগ্রহ করে পিসিটি পূর্ণ সক্ষমতায় যেতে আরও এক থেকে দেড় বছর সময় লাগতে পারে। শর্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সব ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ করবে দায়িত্ব পাওয়া বিদেশি প্রতিষ্ঠান। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট হারে চার্জ পাবে।

পিসিটিতে তিনটি কন্টেইনার ও একটি তেল খালাসের (ডলফিন) জেটি রয়েছে। এগুলোতে একসঙ্গে চারটি জাহাজ ভেড়ানো যাবে। কন্টেইনার জেটির দুটিতে গ্যান্ট্রি ক্রেন থাকবে। সেখানে ভিড়তে পারবে গিয়ারলেস (ক্রেনবিহীন) জাহাজ এবং অপরটিতে গিয়ার্ড (ক্রেনযুক্ত) জাহাজ।

পিসিটির চারটি জেটিতে একসঙ্গে চারটি জাহাজ বার্থিং নিয়ে পণ্য ওঠানামা করার সুযোগ রয়েছে। ফলে বন্দরের বহির্নোঙরে জাহাজের চাপ কমে যাবে। পণ্য খালাসের অপেক্ষায় কোনো জাহাজকে দীর্ঘদিন বসে থাকতে হবে না।

প্রসঙ্গত, চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেডের পাশ থেকে বোট ক্লাব পর্যন্ত আগেকার বিমানবন্দর সড়কের বাঁকগুলো সোজা করে উদ্ধার করা নদীপাড়ের ৩২ একর জায়গায় পিসিটি নির্মাণ করা হয়।

পিসিটি নির্মাণ প্রকল্পের ভিত্তি স্থাপন করা হয় ২০১৭ সালের ৮ সেপ্টেম্বর। নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের ফেব্রম্নয়ারিতে। বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় এক হাজার ২৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে পিসিটি নির্মাণ করে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নকশা অনুযায়ী সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের তত্ত্বাবধানে দেশীয় প্রতিষ্ঠান ই-ইঞ্জিনিয়ারিং এর নির্মাণ কার্যক্রম পরিচালনা করে।

২০২২ সালের মাঝামাঝি নির্মাণকাজ শেষ হলেও নানা কারণে টার্মিনালটি চালু হয়নি। অবশেষে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের আওতায় সৌদি আরবের রেড সী গেটওয়ে লিমিটেডের সঙ্গে গত ডিসেম্বরে চুক্তি সম্পাদনের পর তাদের টার্মিনালটি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর